🌍 গ্লোবাল ভিলেজ (Global Village)
ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তির যুগে একীভূত বিশ্ব
বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ কী?
বিশ্বগ্রাম বা ‘গ্লোবাল ভিলেজ’ হলো এমন একটি ধারণা যেখানে ইলেকট্রনিক যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবী একটি একক সমাজে পরিণত হয়। এটি এমন একটি পরিবেশ যেখানে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষ মুহূর্তের মধ্যে একে অপরের সাথে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।
মূল প্রবক্তা: মার্শাল ম্যাকলুহান (Marshall McLuhan)
প্রবক্তা ও পরিচিতি
কানাডার বিখ্যাত টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ও যোগাযোগ তাত্ত্বিক মার্শাল ম্যাকলুহান ১৯৬২ সালে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ 'The Gutenberg Galaxy' এবং ১৯৬৪ সালে 'Understanding Media' বইতে এই ধারণাটি প্রথম তুলে ধরেন।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার প্রধান ৫টি উপাদান
- হার্ডওয়্যার (Hardware): কম্পিউটার, মোবাইল, স্যাটেলাইট ইত্যাদি।
- সফটওয়্যার (Software): বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ও ব্রাউজার।
- নেটওয়ার্ক (Connectivity): ইন্টারনেট সংযোগ।
- ডেটা (Data): তথ্য বা উপাত্ত।
- মানুষের সক্ষমতা (Capacity): প্রযুক্তি ব্যবহারের জ্ঞান।
বিশ্বগ্রামের ১০টি সুবিধা
- ১. মুহূর্তেই সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করা যায়।
- ২. ঘরে বসেই উন্নত শিক্ষা গ্রহণ ও গবেষণা করা যায়।
- ৩. টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে চিকিৎসা নেওয়া যায়।
- ৪. ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং-এর মাধ্যমে আয় করা যায়।
- ৫. ই-কমার্স বা অনলাইনে কেনাকাটা সহজ হয়।
- ৬. বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতির আদান-প্রদান ঘটে।
- ৭. যেকোনো খবর মুহূর্তেই জানা যায়।
- ৮. ই-মেইল বা ভিডিও কনফারেন্সিং সহজলভ্য।
- ৯. ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে।
- ১০. মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
বিশ্বগ্রামের ১০টি অসুবিধা
- ১. সাইবার ক্রাইম বা ইন্টারনেট অপরাধ বৃদ্ধি।
- ২. ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি।
- ৩. প্রযুক্তির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি।
- ৪. মিথ্যা তথ্য ও গুজবের দ্রুত প্রসার।
- ৫. নিজস্ব সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার ভয়।
- ৬. কপিরাইট আইন লঙ্ঘন বা তথ্য চুরি।
- ৭. শারীরিক পরিশ্রম কমে যাওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি।
- ৮. ডিজিটাল ডিভাইড বা প্রযুক্তিগত বৈষম্য সৃষ্টি।
- ৯. হ্যাকিং-এর মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি।
- ১০. বেকারত্ব সৃষ্টি (অটোমেশনের কারণে)।